মহর্ষির্বিরজানন্দঃ [১৭৭৬-১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দ]

বৈদিক বিদ্যামার্তণ্ডো যোঽখিলপাখণ্ডবিভেত্তা
যেন দয়ানন্দর্ষিসমানং, নররত্নং সমপাদি ।
যস্যাভ্যন্তরনেত্রে হ্যাস্তাং, দিব্যতেজসা পূর্ণে
বন্দনীয়কমনীয়পদোঽসৌ, বিরজানন্দমহাত্মা ॥১॥
ভাবার্থ: যিনি বৈদিক বিদ্যার সূর্যসম প্রবক্তা হয়ে সর্ব পাষণ্ড মত খণ্ডন করতেন, যিনি ঋষি দয়ানন্দের ন্যায় মানবরত্ন পেয়েছিলেন, যার আভ্যন্তরীণ নেত্র জ্ঞানের তেজে পরিপূর্ণ ছিলো, সেই পূজ্য মহাত্মা বিরজানন্দ আমাদের বন্দনীয় পদযুগলধারী।
আর্ষগ্রন্থাধ্যয়নবিলোপো জাতো ভারতবর্ষে সর্বত্রৈবানার্ষপুস্তকাধ্যয়নে জনা নিমগ্নাঃ ।
দৃষ্ট্বানিষ্টং খলু পরিণামং, বদ্ধপরিকরো ধীরো বন্দনীয়কমনীয়পদোঽসৌ, বিরজানন্দমহাত্মা ॥২॥
ভাবার্থ: ভারতবর্ষে আর্ষগ্রন্থের পঠনপাঠন বিলোপ, অনার্ষ গ্রন্থের প্রচলনে মানুষকে নিমগ্ন হতে দেখে এবং এর অনিষ্টকর পরিণাম দেখে বদ্ধপরিকর মহাত্মা বিরজানন্দ আমাদের বন্দনীয়।
কথং দক্ষিণা দেয়া ভগবন্ ধনরহিতেন ময়েয়ম্
দয়ানন্দয়তিমেবং চিন্তাতুরমবলোক্য নিতান্তম্ ।
মৈবং বিধাং দক্ষিণামীহে মাকার্ষীস্ত্বং চিন্তাং
সমাশ্বাসয়ন্নিত্থং বন্দ্যো, বিরজানন্দমহাত্মা ॥৩॥
ভাবার্থ: 'ভগবন্ ! আমি কী দক্ষিণা দিবো ? আমি যে ধনহীন ' সন্ন্যাসী দয়ানন্দের এই চিন্তা দেখে যিনি কোন ধন দক্ষিণা চান না বলেছিলেন, সেই মহাত্মা বিরজানন্দ আমাদের বন্দনীয় ।
বৈদিকমার্গ সরলং ত্যক্ত্বা জনাঃ শুদ্ধমতিহীনাঃ,
ইতস্ততো ভ্রষ্টা অতিদীনাঃ, শোচনীয়গতিমাপ্তাঃ ।
সন্মার্গ সন্দর্শ্য বৎস তান্, দলিতান্ পতিতানুদ্ধর,
এবং বদন্নুদারো বন্দ্যো, বিরজানন্দমহাত্মা ॥৪॥
ভাবার্থ: 'হে শিষ্য ! সরল বৈদিক মার্গ ত্যাগ করে এদিক-ওদিকে বিভ্রান্ত দীন, শোচনীয় গতিপ্রাপ্তদের সত্যের পথ দেখিয়ে দলিত-পতিতজনকে উদ্ধার করো ', নিজ শিষ্য দয়ানন্দকে এমম উপদেশ দাতা মহাত্মা বিরজানন্দ আমাদের বন্দনীয় ।
আর্ষান্ গ্রন্থানপঠিত্বা যেঽনার্ষপুস্তকেষ্বাস্থাং,
কৃত্বা সম্প্রদায়শতভক্তা ভূত্বাতীব বিভক্তাঃ ।
নিগমাগমদীক্ষাং ত্বং তেভ্যো দত্বা ধ্বান্তং পরিহর,
ইমাং দক্ষিণামুররীকুর্বন্ বিরজানন্দয়তীড্যঃ ॥৫॥
ভাবার্থ: 'আর্ষগ্রন্থ না পড়ে, অনার্ষ পুস্তক পড়ে যারা শত সম্প্রদায়ে ভক্ত নামে বিভক্ত হচ্ছে তাদের বেদমার্গে এনে অজ্ঞানের অন্ধকার নাশ করো ' ঋষি দয়ানন্দের কাছে যিনি গুরুদক্ষিণা হিসেবে এই প্রতিজ্ঞা চেয়েছিলেন সেই মহাত্মা বিরজানন্দ আমাদের পূজনীয়।
অন্তেবাসী যেন দয়ানন্দর্ষিসমানোঽলম্ভি,
যস্য খ্যাতিস্তৎকৃতসুকৃতৈরখিলে ভুবনে ব্যাপ্তা ।
ত্যাগতপস্যামূর্তিরুদারো গুরুরাদর্শাচার্যো,
বন্দনীয়কমনীয়পদোঽসৌ বিরজানন্দমহাত্মা ॥৬॥
ভাবার্থ: যিনি মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর ন্যায় শিষ্য পেয়েছিলেন, যে মহর্ষি দয়ানন্দের কীর্তি সম্পূর্ণ সংসারে ব্যপ্ত হয়েছে, যে দয়ানন্দ ত্যাগ-তপস্যার প্রতিমূর্তি ছিলেন সেই মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর গুরু ও আদর্শ মহাত্মা বিরজানন্দের পদযুগল আমাদের বন্দনীয় ।
স্বতন্ত্রতার্থং কৃতে বিপ্লবে, যেন গৃহীতো ভাগঃ,
তথা প্রেরিতা ভূপাঃ কর্তুং ক্রান্তিমুত্তমাং ঘোরাম্ ।
দেশোন্নতিহিতশুভা ভাবনা ভরিতাঃ প্রিয়তমশিষ্যে,
নবযুগনির্মাতা কিল বন্দ্যো বিরজানন্দমহাত্মা ॥৭॥
ভাবার্থ: স্বাধীনতা বিপ্লবে যিনি অংশ নিয়েছিলেন, যার প্রেরণায় রাজারা স্বতন্ত্র-সংগ্রামে প্রবৃত্ত হয়েছিলো, মহর্ষি দয়ানন্দ দেশের ক্রান্তিলগ্নে রাষ্ট্রের উন্নতির জন্য যিনি উদ্ধুদ্ধ করেছিলেন সেই নবযুগ নির্মাতা মহাত্মা বিরজানন্দ আমাদের বন্দনীয় ।

বাংলাদেশ অগ্নিবীর