ধর্মবীরো মহাত্মা শ্রদ্ধানন্দঃ
(২২ ফেব্রুয়ারী, ১৮৫৬ খ্রি. ~ ২৩ ডিসেম্বর, ১৯২৬ খ্রি.)
যেষাং জীবিতমেব সর্বমভবল্লোকোপকারেঽর্পিতং,
দাতুং
বৈদিকশিক্ষণং গুরুকুলং সংস্থাপিতং যৈঃ শুভম্ ।
অস্পৃশ্যত্বনিবারণার্থমনিশং
যত্নঃ কৃতো যৈঃ সদা,
শ্রদ্ধানন্দমহোদয়ান্ গুরুবরান্ বন্দেঽতি ভক্ত্যা যুতঃ
॥১॥
ভাবানুবাদ:
যার সমগ্র জীবন পরোপকারে অর্পিত ছিলো, যিনি বৈদিকশিক্ষার জন্য গুরুকুলের
সংস্থাপন করেছিলেন, অস্পৃশ্যতা দূরীকরণে যিনি দিবারাত্রি প্রযত্নশীল ছিলেন -
এমন গুরুবর স্বামী শ্রদ্ধানন্দকে ভক্তির আতিশয্যে নমস্কার করি।
যেষাং নির্ভয়তা হি লোকবিদিতাঽঽসীদদ্বিতীয়া ধ্রুবং,
সেনায়াঃ
পুরতোঽপ্যনাবৃতমুরো নির্ভীকসন্ন্যাসিভিঃ ।
শুদ্ধ্যান্দোলনচালকান্
ধৃতিধরান্, তানত্যুদারাশয়ান্,
শ্রদ্ধানন্দমহোদয়ান্ গুরুবরান্ বন্দেঽতি
ভক্ত্যা যুতঃ ॥২॥
ভাবানুবাদ:
যার নির্ভীকস্বভাব লোকবিদিত, যে নির্ভীক সন্ন্যাসী সৈনিকদের সামনে
উন্মুক্ত বক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, যিনি অতিউদার - শুদ্ধি আন্দোলন প্রবর্তক -
ধৈর্যশীল সেই মহাত্মা শ্রদ্ধানন্দকে অতিভক্তিবশত নমস্কার করি।
ঐক্যং স্থাপয়িতুং জনেষু সততং হৃদ্যোগজং শাশ্বতং,
যত্নো যৈর্বিহিতো দিবানিশমিহ প্রীত্যন্বিতেনাত্মনা ।
ধর্মার্থং বলিদানতোঽমরপদং যে ধর্মবীরা গতাঃ,
শ্রদ্ধানন্দমহোদয়ান্ গুরুবরান্ বন্দেঽতিভক্ত্যা যুতঃ ॥৩॥
ভাবানুবাদ:
মানবহৃদয়ে ঐক্যস্থাপনের জন্য প্রীতিযুক্ত মনে যিনি দিনরাত মহান প্রচেষ্টা
করেছেন, যে ধর্মবীর ধর্মের জন্য আত্মবলিদানের কারণে অমর পদ লাভ করেছেন এমন
গুরুবর স্বামী শ্রদ্ধানন্দ মহারাজকে বন্দনা করি।
শ্রদ্ধায়া জগদীশ্বরে যতিবরাঃ যে মূর্তিমন্তোঽভবন্
সত্যস্যাবিরতং ব্রতং হিতকরং যৈঃ সার্বভৌমং ধৃতম্ ।
ভক্তিং যে দধিরে ধ্রুবাং ধ্রুবতমে ব্রহ্মণ্যনন্তেঽব্যয়ে,
শ্রদ্ধানন্দমহোদয়ান্ গুরুবরান্, বন্দেঽতিভক্ত্যা যুতঃ ॥৪॥
ভাবানুবাদ:
যে যতিশ্রেষ্ঠ জগদীশ্বরে শ্রদ্ধালু ছিলেন, যিনি সত্যের পথে যাওয়ার জন্য
সার্বভৌম ব্রত ধারণ করেছিলেন; অনন্ত, অবিনাশী, নিরবিকার ব্রহ্মে যিনি অগাধ
ভক্তিশীল ছিলেন এমন গুরুবর স্বামী শ্রদ্ধানন্দ মহারাজকে আমি বন্দনা করি।
বিশুদ্ধা ধর্মজ্ঞাঃ সকলমলহীনা বলভৃতঃ
অহিংসায়াঃ পুণ্যং ব্রতমিহ ধৃতং যৈর্যতিবরৈঃ ।
শ্বপাকে সদ্বিপ্রে শুনি করিণি নিত্যং সমদৃশো
গুরুন্ শ্রদ্ধানন্দান্ সবিনয়মহং নৌমি সততম্ ॥৫॥
ভাবানুবাদ:
বিশুদ্ধ ধর্মজ্ঞ, বলশালী, নির্মল যে যতিশ্রেষ্ঠ অহিংসার পুণ্যব্রত ধারণ
করেছিলেন, যিনি চণ্ডাল-বিপ্র-হস্তিতে সমদৃষ্টি রাখতেন এমন গুরুবর স্বামী
শ্রদ্ধানন্দ মহারাজকে আমি সবিনয়ে নমস্কার করি।
সুতাঃ সর্বে তুল্যাঃ জগতি হি যতস্তে ভগবতঃ
ততঃ প্রীত্যা প্রেক্ষ্যা ভুবি খলু সমস্তা অসুভৃতঃ ।
ইতীমং সদ্বোধং দদত ইহ নিত্যং হিতকরং,
গুরূন্ শ্রদ্ধানন্দান্ সবিনয়মহং নৌমি সততম্ ॥৬॥
ভাবানুবাদ:
'ভগবানের সৃষ্টিতে সকলেই ভগবানের সন্তানস্বরূপ হওয়ায় সমান, তাই
প্রাণীমাত্রে প্রীতিপূর্বক ব্যবহার করা উচিত' এমন উপদেশ যিনি দিতেন সেই
গুরুবর স্বামী শ্রদ্ধানন্দ মহারাজকে সবিনয়ে প্রণাম করি ।
ভক্তশ্রেষ্ঠঃ পরজনহিতে সর্বদা দত্তচিত্তঃ
শ্রদ্ধাং শুদ্ধাং বিমলহৃদয়ে, মাতরং মন্যমানঃ ।
শিক্ষাং হৃদ্যাং শুভগুরুকুলে সন্দদানো বটুভ্যঃ,
শ্রদ্ধানন্দো গুরুজনবরঃ সর্বদা বন্দনীয়ঃ ॥৭॥
ভাবানুবাদ:
ভক্তশ্রেষ্ঠ, পরজনহিতে সদা নিবিষ্ট, শুদ্ধ শ্রদ্ধা যার বিমলহৃদয়ে মায়ের
মতো বিরাজিত, গুরুকুলের বিদ্যার্থীদের যিনি হৃদয়গ্রাহী শিক্ষা প্রদান করতেন
এমন গুরুবর স্বামী শ্রদ্ধানন্দ মহারাজ সর্বদা বন্দনীয়।
নির্ভীকো যঃ, সরলহৃদয়ঃ, সত্যবাক্ স্পষ্টবক্তা,
দেবেভক্তিং পরমবিমলাম্ আদধানোঽবিকম্পাম্ ।
শুদ্ধিদ্বারা সকলমনুজান্ দীক্ষমাণঃ সুধর্মে,
শ্রদ্ধানন্দো গুরুজনবরোঽসৌ সদা বন্দনীয়ঃ ॥৮॥
ভাবানুবাদ:
নির্ভীক, সরলহৃদয়, সত্যবাদী, স্পষ্টবক্তা, ভগবদ্ভক্ত, শুদ্ধিক্রিয়া
দ্বারা সর্বমানবে সুধর্মে দীক্ষাদাতা গুরুবর স্বামী শ্রদ্ধানন্দ মহারাজ
সদৈব বন্দনীয়।
দত্বা তন্বো মুদিতমনসা যো বলিং ধর্মবেদৌ,
প্রাপ্তো লোকে হ্যমরপদবীং ত্যাগশীলো মহাত্মা ।
আসীৎসর্বং বিমলচরিতং যস্য সদ্যজ্ঞরূপং,
শ্রদ্ধানন্দো গুরুজনবরোঽসৌ সদা বন্দনীয়ঃ ॥৯॥
ভাবানুবাদ:
যে ত্যাগী মহাত্মা প্রসন্নচিত্তে ধর্মবেদীতে আত্মবলিদান করেছেন, অমর
ধর্মবীর পদবী লাভ করেছেন, যার সমগ্র চরিত্র যজ্ঞস্বরূপ ছিলো এমন গুরুবর
স্বামী শ্রদ্ধানন্দ মহারাজ সর্বদা বন্দনীয়।
অন্যায়ং যঃ সকলমহসা, রোদ্দ্ধুকামঃ প্রয়েতে,
সত্যাহিংসাবলযুত ইহান্যায়িভির্যোদ্ধুকামঃ ।
কারাকষ্টং, বয়সি চরমে, যঃ সমোদং বিষেহে,
শ্রদ্ধানন্দো গুরুজনবরোঽসৌ সদা বন্দনীয়ঃ ॥১০॥
ভাবানুবাদ:
যিনি অন্যায়কে প্রবল তেজে অবরুদ্ধ করেছেন, সত্য ও অহিংসাবলে অন্যায়ের সাথে
যুদ্ধ করেছেন, যিনি বৃদ্ধাবস্থাতেও কারাগৃহের কষ্ট প্রসন্ন হয়ে সহ্য
করেছেন এমন গুরুবর স্বামী শ্রদ্ধানন্দ মহারাজ সর্বদা বন্দনীয়।
যেতে নিত্যং দলিতপতিতান্ মানবানুদ্দিধীর্ষুঃ
পূতান্ সর্বান্ শ্রুতিবচনতঃ পাবনঃ সঞ্চিকীর্ষুঃ ।
অস্পৃশ্যত্বং সমসমমনাঃ দূরয়ন্ জাতিভেদং,
শ্রদ্ধানন্দো গুরুজনবরোঽসৌ সদা বন্দনীয়ঃ ॥১১॥
ভাবানুবাদ:
যিনি দলিত-পতিতোদ্ধারণে সর্বদা যত্নশীল, শ্রুতিবচনে পবিত্রকরণে
সংকল্পবদ্ধ, সর্বজীবে সমদর্শন হৃদয়ে ধারণপূর্বক অস্পৃশ্যতা ও জাতিভেদ
দূরকারী এমন গুরুবর স্বামী শ্রদ্ধানন্দ সদা বন্দনীয় ।
দেবেন্দ্রং তং ভুবনপিতরং প্রার্থয়ামো মহেশং
দদ্যাচ্ছক্তিং যতিপথি সদা নির্ভয়ত্বেন গন্তুম্ ।
শ্রদ্ধাং শুদ্ধাং সকলমনুজানাং মনস্স্বত্র দধ্যাদ্,
ভূয়াদ্ যেনাখিলজনগণাদর্শভূতঃ সমাজঃ ॥১২॥
ভাবানুবাদ:
দেবেন্দ্র জগত্যুপাদক পরমাত্মার কাছে প্রার্থনা করি তিনি আমাদের শক্তি দিন
যেন সেই সন্ন্যাসী অর্থাৎ স্বামী শ্রদ্ধানন্দের প্রদর্শিত মার্গে নির্ভয়ে
চলতে পারি। কৃপালু ভগবান যেন আমাদের সেই শ্রদ্ধা ধারণ করান যাতে আমরা
সকলের আদর্শ হতে পারি।
© বাংলাদেশ অগ্নিবীর