যে বা যাহারা মহর্ষি দয়ানন্দ জী-কে প্রত্যক্ষ দর্শন করেছেন, তাহারা তাঁর ভব্য শরীর, দর্শনীয় মুখাকৃতি তথা অতিশয় বলযুক্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বর্ণন করেছেন । এ স্থলে এহেন প্রত্যক্ষ দর্শির অনুভব ব্যক্ত করা হচ্ছে –
ক. মহর্ষি দয়ানন্দ জীকে পাদরি টী.জে.স্কাট (Thomas Jefferson Scott) গঙ্গার তটবর্তী প্রদেশে বিচরণ করতে দেখেন ; পাদরি “Missionary Life Among the Villages in India” নামক স্বীয় পুস্তকের ১৬২-১৬৮ পৃষ্ঠায় লিখেন,
“দয়ানন্দ এক ভব্য আকৃতিবিশিষ্ট পুরুষ ছিলেন। অতিকায়, সুগঠিত অঙ্গ যুক্ত, অণ্ডাকার কপাল, সৌম্য মুখমণ্ডল বিশিষ্ট কৌপীনধারী, আসনে উপবেশন হতেন এবং আমার সহিত প্রসন্নতাপূর্বক বার্তালাপ করতেন ।”
খ.শাহপুরা রাজ্যের নরেশ রাজাধিরাজ নাহরসিংহ স্বীয় সংস্মরণে ব্যক্ত করেছেন -
“ স্বামীজী পুষ্টকায়, দৃঢ় জত্রুবিশিষ্ট এবং অতিকায় বলিষ্ঠ ছিলেন। তাঁর দৈহিক গঠনের সাথে এ সময়ের বলবান মল্লযোদ্ধাদের দৈহিক গঠনের তুলনা করলে বিস্তর অন্তর লক্ষ্য করি। তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এহেন সুদৃঢ় এবং সুডৌল ছিল যে, এরূপ দৈহিক গঠন আজ অব্দি আমার কোথাও দৃষ্ট হয় নি ”
[ আর্যমিত্র পত্রিকার দয়ানন্দ জন্মশতাব্দী অঙ্ক ]
গ. বনেড়া (ভীলবাড়া জেলা, রাজস্থান) রাজ্যের রাজ পণ্ডিত নগজীরাম শর্মা জী মহর্ষি দয়ানন্দ জীর দৈহিক গঠনের বর্ণনায় ব্যক্ত করেন -
“এহেন দীর্ঘ, পুষ্ট এবং ভব্য মূর্তি আমার তাঁর ব্যতীত আজ অব্দি কোথাও, আর কারোরই দৃষ্ট হয় নি । মহাত্মার (মহর্ষি দয়ানন্দ) শিরের পরিধি দুই ফিটের কম ছিল না । গ্রীবাদেশ ছিল উঁচু, মুখাবয়ব গোলাকার এবং লম্বা ছিল। নেত্রদ্বয় বিশেষ বড়ো ছিল না, কর্ণ এবং নাসিকার গঠন বড়ো ছিল। বাহুদ্বয় অতিশয় পুষ্ট এবং আজানু ছিল লম্বা । বক্ষস্থল ছিল বীর ধনুকধারীর ন্যায় প্রশস্ত এবং দৃঢ় । শরীরটা অত্যন্ত পুষ্ট হলেও উদর বর্ধিত ছিল না। উভয় উরু ছিল পরিপুষ্ট এবং তিন ফুটের পরিধী থেকে কম নয়। পিণ্ডলিগুলোও ( গোড়ালির উপরের মাংসল অংশ ) ছিল পুষ্ট। পা দুটো যথেষ্ট লম্বা ছিল। গায়ের রং ফর্সা ছিল।"
ঘ. ফর্রুখাবাদ রাজ্যের পণ্ডিত গণেশপ্রসাদ শর্মা বর্ণনা করেছেন –
“মহর্ষি দয়ানন্দ জীর গায়ের রং ছিল ফর্সা, শরীর সুডৌল এবং বিশাল ছিল । বার্তালাপে ছিলো নম্রতা ।”
[ফর্রুখাবাদ কা ইতিহাস]
আজমের নগরের ব্যারিস্টার রামগোপাল জীর বর্ণনা অনুসারে মহর্ষির দৈহিক উচ্চতা ছিলো ৬ ফিট । তিনি আরও বলেন,
“মহর্ষি ছিলেন প্রভাবশালী আকৃতিবিশিষ্ট, শিখা শ্মশ্রু রহিত, মুণ্ডিত মস্তক, কৌপীনধারী (প্রারম্ভিক কালে), মাংসল বাহুবিশিষ্ট তথা দৈহিক গঠন পূর্ণ ছিল” ।