যিনি মননশীল হয়ে স্বাত্মবৎ[1]সকলের সুখ-দুঃখ ও লাভ-ক্ষতি নিজের বলে মনে করেন তাঁকেই মানুষ বলে ।[2]তিনি শক্তিশালী অন্যায়কারীকেও ভয় পান না কিন্তু নির্বল ধর্মাত্মাকে ভয় করেন । কেবল তাই নয় বরং ধর্মাত্মাগণ যতই মহা-অনাথ, নির্বল ও গুণহীন হোন না কেন তিনি তাঁদের সর্বসামর্থ্য দ্বারা রক্ষা, উন্নতি সাধন করেন এবং তাঁদের প্রিয় আচরণ করেন ; অধার্মিক ব্যক্তিরা সাম্রাজ্যাধিকারী, সহায়সম্পন্ন, মহাবলবান এবং গুণবান হলেও তিনি সর্বদা তাদের বিনাশ, অবনতি সাধনে সচেষ্ট থাকেন এবং তাদের প্রতি অপ্রিয় আচরণ করেন অর্থাৎ যতদূর সম্ভব অন্যায়কারীদের শক্তিক্ষয়[3]এবং ন্যায়কারীদের বলোন্নতি করেন। প্রয়োজনে যতই দুঃখভোগ করতে হোক, এমন কি প্রাণ বিসর্জন দিতে হলেও এই মানবতারূপ ধর্ম থেকে বিচ্যুত হবে না ।
- অথ স্বমন্তব্যামন্তব্যপ্ৰকাশঃ [ সত্যার্থ প্রকাশ ]
[1] যজু০ ৪০।৭ ‘য়স্মিন্ সর্বাণি ভূতান্যাত্মৈবাভূদ্বিজানতঃ’ = হে মানবগণ ! পরমাত্মা, জ্ঞান, বিজ্ঞান অথবা ধর্মের বিষয়ে যাঁর সম্যক্ জ্ঞান আছে, তাঁর নিকট সকল প্রাণিমাত্র নিজের আত্মার সমতুল্যই হয়।
[2] নিরু০ ৩।৭ ‘মনুষ্যাঃ কস্মাৎ । মত্বা কর্মাণি সীব্যন্তি মনস্যমানেন সৃষ্টাঃ মনস্যতিঃ পুনর্মনস্বীভাবে মনোরপত্যম্ মনুষো বা’ = মনুষ্য কেন বলা হয় ? কেননা (১) চিন্তা করে কাজ করে, বিনা বিচারে না (২) প্রশস্ত মনযুক্ত থেকে যে উৎপন্ন হয়েছে (৩) মননশীলের সন্তান - মনুষ্য হবে ।
[3] ঋগ্বেদ ১০।৫৩।৪ ‘যেনাসুরাঁ অভি দেবা অসাম’ = দুষ্টদের আমরা তথা বীররা অভিভূত করি ।
©️ বাংলাদেশ অগ্নিবীর