মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী ও শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা




মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী স্বীয় গ্রন্থে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার প্রতি অত্যন্ত আদর প্রদর্শন করেছেন  । কিন্তু অধুনা সময়ে অনধ্যায়ীগণ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার গুরুত্ব ও প্রামাণিকতা স্বীকারে কুণ্ঠিত যা ঋষি আদর্শ বিরোধী । শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা স্মৃতিপ্রস্থানের অন্তর্গত এবং উপনিষদের সার হিসেবে প্রসিদ্ধ , ফলতঃ তার ব্যাখ্যার গ্রহণযোগ্যতা  বেদানুকূল হিসেবে অবশ্য স্বীকার্য । ভগবৎপাদ মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আজ আমরা প্রামাণ্যতা বিষয়ে আলোচনা করবো - 

  • মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী গীতা পড়াতেন -

 

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ৭০ 

 

  • মহর্ষির গীতা ব্যাখ্যা ১ মাসেরও বেশী সময় ধরে করেছিলেন -

 

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ৭১ 
 
 
  • মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী গীতা ব্যাখ্যা করতেন - 
 

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ৭১ 
 

  • গীতার ' সর্বধর্মান পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ ' [ ১৮.৬৬] ব্যাখ্যা - 



মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ৭২-৭৩


  •  ১ মাসের বেশী সময় ধরে গীতার ব্যাখ্যা

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ৭৩


কেউ কেউ বলতে পারেন মহর্ষি তখন পৌরাণিক ভাবাপন্ন ছিলেন  । তাঁদের জন্য - মহর্ষির দ্বারা গায়ত্রী উপদেশ , মূর্তিপূজার খণ্ডন - 


 মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ৮৪


  • মহর্ষির দ্বারা গীতা পাঠের উপদেশ -

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ১০৮


  • মহর্ষি গীতার ' যদা যদা হি..' শ্লোককে কখনোই প্রক্ষিপ্ত বলেননি । 


 
 মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ১০৯
 
 
 
  • ব্যাকরণের দক্ষতা পরীক্ষায় মহর্ষি গীতার শ্লোক দিয়েছিলেন পৌরাণিক পণ্ডিতকে - 
 মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ১৩৪-১৩৫
 
 
  • মহর্ষির গীতার ' সর্বধর্মান পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ ' [ ১৮.৬৬] ব্যাখ্যা - 

 
 মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ১৯১
 
  • মহর্ষি গীতাকে শাস্ত্র বলেছেন - 

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ১৪৬
 
  • মহর্ষির দ্বারা গীতার  'ভ্রাময়ন্‌ সর্বভূতানি যন্ত্ররূঢ়ানি মায়য়া' [১৮.৬১] ব্যাখ্যা -
 

 
মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ৬০১
 
 
  • মহর্ষির গীতার ' সর্বধর্মান পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ ' [ ১৮.৬৬] ব্যাখ্যা - 

শ্রীমদ্দয়ানন্দ প্রকাশ - স্বামী সত্যানন্দ [ পৃষ্ঠা ৬৫ ]


  • মহর্ষির গীতা ব্যাখ্যা সম্পর্কে অভিমত ' রসময়  , সারগর্ভিত ও অশ্রুতপূর্ব '
 
শ্রীমদ্দয়ানন্দ প্রকাশ - স্বামী সত্যানন্দ [ পৃষ্ঠা ৬৫ ] 

  • মহর্ষি স্মৃতি , উপনিষদ ও গীতা পাঠ করে ভক্তদের কৃতার্থ করতেন -

শ্রীমদ্দয়ানন্দ প্রকাশ - স্বামী সত্যানন্দ [ পৃষ্ঠা ৭২ ]


  • মহর্ষি প্রতিদিন উপনিষদ ও গীতার কথা শোনাতেন - 
শ্রীমদ্দয়ানন্দ প্রকাশ - স্বামী সত্যানন্দ [ পৃষ্ঠা ৭৩ ] 


  • মহর্ষির দ্বারা 'শ্রেয়ান্ স্বধর্মো বিগুণঃ পরধর্মাৎ স্বনুষ্ঠিতাৎ' [ গীতা ৩.৩৫] ব্যাখ্যা  -
শ্রীমদ্দয়ানন্দ প্রকাশ - স্বামী সত্যানন্দ [ পৃষ্ঠা ২৫০ ]
 
 
  • ঘাতকের আক্রমণ প্রতিরোধ করে গীতার ' নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি নৈনং দহতি পাবকঃ' [ গীতা ২.২৩ ] বলে হুংকার প্রদান -
শ্রীমদ্দয়ানন্দ প্রকাশ - স্বামী সত্যানন্দ [ পৃষ্ঠা ২০৫ ]

 
 মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবন চরিত - শ্রী দেবেন্দ্রনাথ ও বাবু ঘাসীরাম , আজমের , পৃষ্ঠা ১২৬
 
 
  • গীতা প্রক্ষিপ্ত নয় , চাইলে আমার শাস্ত্রে শাস্ত্রার্থ করুক- মহর্ষির দৃঢ় বচন 

 
শ্রীমদ্দয়ানন্দ প্রকাশ - স্বামী সত্যানন্দ [ পৃষ্ঠা ১৯১ ]
 
 
  • মহর্ষির চিঠিপত্রে গীতা শ্লোক ব্যবহারের সামান্য কিছু দৃষ্টান্ত - 


 
 মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর পত্র ও বিজ্ঞাপন , ২য় খণ্ড , পৃষ্ঠা ৮১৭
 

 মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর পত্র ও বিজ্ঞাপন , ২য় খণ্ড , পৃষ্ঠা ৮৪৭

 

 


 মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর পত্র ও বিজ্ঞাপন , ২য় খণ্ড , পৃষ্ঠা  ৮০৩

 
  মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর পত্র ও বিজ্ঞাপন , ২য় খণ্ড , পৃষ্ঠা ৮৮৮

 
 মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর পত্র ও বিজ্ঞাপন , ২য় খণ্ড , পৃষ্ঠা ৮৮৯

 মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর পত্র ও বিজ্ঞাপন , ২য় খণ্ড , পৃষ্ঠা ৮৯০

 

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী স্বীয় জীবদ্দশায় প্রাথমিকভাবে ভিন্নমত থাকলেও [ যেমন প্রথমে বৈষ্ণব মত খণ্ডন বা শৈব মত মণ্ডন, বিষ্ণু ভাগবতের খণ্ডন ও দেবীভাগবতের মণ্ডন ইত্যাদি ] জীবনের শেষ পর্যন্ত গীতা ত্যাগ করেননি  । কেউ যদি বলে তিনি অমুক স্থলে গীতা প্রমাণ নয় বলেছেন [ জীবন চরিতের ৬৫১ , সম্বত ১৯৩৮ ] সেখানে দেখা যায় বিতর্ক বেদ নিয়ে হচ্ছে , শ্রুতি প্রমাণ নিয়ে শাস্ত্রার্থে স্মৃতি প্রমাণ পরতঃপ্রমাণ এবং গ্রহণীয় হবে না এটাই স্বাভাবিক  । নতুবা উপরের চিঠিতে মহর্ষি মৃত্যুর ৪ মাস [ ১৯৪০ সম্বত ] আগেও তার একই চিঠিতে গীতার ৩ টি শ্লোক কেন উল্লেখ করবেন  ?  প্রকৃতপক্ষে গীতার প্রতি অনাবশ্যক ও অযাচিত বিদ্বেষভাবাপন্ন হয়ে কিংবা বিভ্রান্তিবশতঃ এই মতের অনুগামী অনেকে হয়েছেন ।

 কেউ কেউ বলেন মহর্ষি মনুস্মৃতিরও উদ্ধৃতি দিয়েছেন ও তাতে প্রক্ষিপ্ততা মানতেন, তবে গীতায় কেন নয়  ? এর সহজ সমাধান হলো মহর্ষি নিজে গীতার প্রক্ষেপ তার গ্রন্থে কদাপি মনুর ন্যায় উল্লেখ করেননি । যদি কেউ মহর্ষির পূর্ব কোন মন্তব্য দেখাতে চায় তাঁদের এটাও স্মরণ রাখা উচিত যে মহর্ষির সর্বশেষ গ্রন্থাদি ও চিঠিপত্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তরূপে প্রামাণ্য ।

অধিকন্তু মহর্ষি স্বীয় অনুমোদিত পাঠ্যক্রম সংস্কারবিধিতে যা দিয়েছেন তা-ই চূড়ান্তরূপে স্বীকার্য এই বিষয়ে সকল বিদ্বান একমত । সেখানে মহাভারতের উৎকৃষ্ট অংশ পাঠের বিধানে যে গীতারই অনুমোদন হয় তা বলাই বাহুল্য । এছাড়াও সংস্কারবিধি , সত্যার্থ প্রকাশে বর্ণাশ্রম -  সৃষ্টিবিষয়ে গীতার প্রভূত শ্লোক উদ্ধৃত হয়েছে যা স্বাধ্যায়ী পাঠক মাত্রেই অবগত  । বাহুল্যভয়ে আমরা কতিপয় দৃষ্টান্ত উল্লেখ করছি ।




শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা বিষয়ে মহর্ষির জীবনী , সত্যার্থ প্রকাশ থেকে আংশিক উদ্ধৃতি [ যেমন কোথাও গীতার প্রচলিত অর্থকে বেদ বিরুদ্ধ বলা ] বিকৃত করে উপস্থাপন করে করা মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তির সমস্ত খণ্ডন পড়ুন এখানে - 

 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.