মহর্ষি দয়ানন্দ জী মহারাজ তাঁর জীবদ্দশায় আর্যসমাজে বহু প্রবচন প্রদান করেছিলেন । একদিন শারদাপ্রসাদ ভট্টাচার্য অন্য সভাসদদের অনুমতিতে আর্যসমাজের অধিবেশনে এই প্রস্তাব রাখেন যে, মহারাজকে আর্যসমাজ লাহোরের সংরক্ষক বা অধিনায়ক এর পদবী দেয়া হোক, অন্য সভাসদেরাও এতে সহমত হয়েছিলেন, পরন্তু মহারাজ একে অস্বীকার করেন এবং বলেন এ থেকে গুরুবাদের গন্ধ আসছে, আর আমার উদ্দেশ্য গুরুবাদ প্রথা বিনষ্ট করা, স্বয়ং গুরু সেজে এক নতুন পথ স্থাপন করা নয়। যদি কাল এই পদবী আমার মনের পরিবর্তন আনে অথবা এমন না হোক যে যদি আমার চিত্তে পদের অহংকার আসায় এমন কোন কাজ করতে থাকি যা তোমাদের জন্য মেনে নেয়া কঠিন হবে এবং এমন দোষ উৎপন্ন হবে যা অধুনা গ্রন্থে হয়েছে ।
এরপরে প্রস্তাব হয় যে মহারাজকে আর্যসমাজ লাহোরের পরম সহায়ক পদবী দেয়া হোক। এ বিষয়েও মহারাজ অসম্মতি প্রকাশ করেন এবং বলেন যদি আমাকে পরম সহায়ক মানো তবে সেই জগদীশ্বর, জগৎগুরু, সর্বশক্তিমানকে কি মানবে ? পরিশেষে সভাসদদের আগ্রহে তিনি নিজেকে সাধারণ সহায়ক (সভাসদ) হিসেবে স্বীকার করেন এবং অন্য সভাসদের সাথে সাথে নিজের শুভ নাম সভাসদদের তালিকায় অলঙ্কৃত করেন ।
একদিন মহারাজ আর্যসমাজের সাপ্তাহিক সৎসঙ্গে এসেছেন । এমন সময় ঈশ্বর উপাসনা চলছিল । মহারাজজীকে আসতে দেখে সবাই সন্মান প্রদর্শনার্থ দাড়িয়ে যান । উপাসনা সমাপ্তিতে মহারাজ উপদেশ দেন যে উপাসনাকালে উপাসক ঈশ্বরের সৎসঙ্গে মগ্ন হন । এসময় যত মহান ব্যক্তিও আসুক না কেন উপাসকের উচিত না দাঁড়ানো কারণ পরমেশ্বর এর চেয়ে কেউ বড় নয়, অতএব একাজে ভগবানের উপাসনা কর্মে অসম্মান হয় ।
[ মহর্ষি দয়ানন্দ কা জীবন চরিত্র , অষ্টাদশ অধ্যায় ]
©বাংলাদেশ অগ্নিবীর