মহর্ষি দয়ানন্দ ও আর্যসমাজ সম্পর্কে পদ্মভূষণ রাষ্ট্রকবি রামধারী সিংহ 'দিনকর'

  

রামধারী সিং দিনকর" (২৩শে সেপ্টেম্বর ১৯০৮ – ২৪শে এপ্রিল ১৯৭৪) একজন ভারতীয় হিন্দি কবি, প্রাবন্ধিক, দেশপ্রেমিক এবং শিক্ষাবিদ ছিলেন, যাঁকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হিন্দি কবি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ভারতের স্বাধীনতার পূর্বে রচিত তার জাতীয়তাবাদী কবিতার জন্য তাকে বিদ্রোহী কবি হিসাবে স্মরণ করা হয়। তার কবিতা বীর রস দ্বারা উজ্জীবিত হয়েছে এবং তার অনুপ্রেরণামূলক দেশাত্মবোধক রচনার জন্য তাকে রাষ্ট্রকবি ("জাতীয় কবি") হিসাবে প্রশংসিত করা হয়েছে। তার সময়কালে তিনি হিন্দি কবি সম্মিলনের একজন নিয়মিত কবি ছিলেন এবং রুশদের কাছে পুশকিন যেমন জনপ্রিয়, তেমনি হিন্দি ভাষী কবিতা প্রেমীদের কাছে তিনি জনপ্রিয় ও সংযুক্ত ছিলেন।

 দিনকর তিনবার রাজ্যসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং তিনি ৩রা এপ্রিল ১৯৫২ থেকে ২৬শে জানুয়ারি ১৯৬৪ পর্যন্ত ঐ সংসদের সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৫৯ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হন। ১৯৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে তিনি ভাগলপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরও (ভাগলপুর, বিহার) উপাচার্য ছিলেন। 

 


 

মহর্ষি দয়ানন্দ রূঢ়িবাদীদের যে হুঙ্কার দিয়েছিলেন তার থেকে কয়েকগুণ বেশী হুঙ্কার দিয়েছিলেন প্রকাশ্যে হিন্দুত্বের নিন্দুক খ্রিস্টান ও মুসলমানদের। খ্রিস্টান ও মুসলিমদের গ্রন্থে ঢুকে তিনি সেই দোষ দেখিয়েছিলেন যেই দোষ দেখিয়ে তারা হিন্দুত্বের নিন্দা করতো। এতে দুটো লাভ হলো। প্রথমত নিজের নিন্দা শুনে আতংকিত হিন্দুরা এটা জেনে খুশি হলো যে পৌরাণিক বিষয়ের তুলনায় খ্রিস্টান ও মুসলমানরাও হিন্দুত্বের থেকে একটা ভালো না । দ্বিতীয়তব, হিন্দুদের দৃষ্টি তাদের ধর্মের মূলের দিকে আকৃষ্ট হলো, তারা তাদের প্রাচীন পরম্পরার জন্য গর্ববোধ করতে লাগলো। 

 -পদ্মভূষণ রাষ্ট্রকবি রামধারী সিংহ 'দিনকর', সংস্কৃতির চার অধ্যায়, পৃষ্ঠা ৫৬০

 

আর্যসমাজের আবির্ভাবের পরে হিন্দুদের অবিচল উদাসীনতা দূর হলো। হিন্দুদের ধর্ম আরেকবার জেগে উঠলো। আজকের হিন্দু নিজের ধর্মের নিন্দা শুনে আর চুপ করে থাকতে পারেনা। প্রয়োজনে ধর্মরক্ষায় নিজের জীবনও দিতে পারে । 

- পদ্মভূষণ রাষ্ট্রকবি রামধারী সিংহ 'দিনকর', সংস্কৃতির চার অধ্যায়, পৃষ্ঠা ৫৬৭


স্বামী দয়ানন্দের শিষ্যরা ঘোষণা দিলো, 'ধর্মচ্যূত হিন্দু যে কোনো অবস্থায় নিজ ধর্মে ফিরে আসতে পারবে আর অহিন্দুও যদি চায় তবে হিন্দুধর্মে প্রবেশ করতে পারবে' । এটি কেবল সংস্কারের কথা নয়, জাগ্রত হিন্দুত্বের সমর-শঙ্খনাদ ছিলো। আর সত্যিই, রণারূঢ় হিন্দুত্ববাদের যেমন নির্ভীক নেতা স্বামী দয়ানন্দ হয়েছেন, আর কেউ তেমন হতে পারেনি । 

 - পদ্মভূষণ রাষ্ট্রকবি রামধারী সিংহ 'দিনকর', সংস্কৃতির চার অধ্যায়, পৃষ্ঠা ৫৬০


 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.