পণ্ডিত জে.পি. চৌধুরী, কাব্যতীর্থ
খণ্ডনাত্মক সাহিত্যের প্রগল্ভ লেখক তথা মহান শাস্ত্রার্থকর্তা পণ্ডিত জে. পি. চৌধুরী জীর জন্ম মির্জাপুর জেলার অদলহাট গ্রামে শ্রী রামগুলাম চৌধুরী জীর গৃহে ১৮৮১ সনের ১লা মে ।
১৭ বর্ষ আয়ুতে তিনি উর্দু মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, পুনঃ ১৯০০ সনে প্রথম শ্রেণির সাধারণ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । এর মধ্যে তিনি স্বতন্ত্রভাবে ফরাসি বিষয়ে Entrance পরীক্ষাও দেন এবং উত্তীর্ণ হন । অধ্যয়ন কার্য সম্পন্নের পর তিনি প্রথমে মিশন হাই-স্কুল, মির্জাপুরের অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন । তৎপশ্চাৎ মধ্যপ্রদেশের ধার রাজ্যে শিক্ষা বিভাগের নিরীক্ষক পদে অধিষ্ঠিত হন । কিছুকাল পর তিনি রাচীর সেইন্ট পল হাই-স্কুলে সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক হন । সেখানে তিনি চার বর্ষ অধ্যাপনা করার পর জার্মান মিশন হাই-স্কুলে সংস্কৃত বিভাগের মুখ্য পণ্ডিত পদে নিযুক্ত হন ।
উক্ত স্কুলে অবস্থানকালে পণ্ডিত জী কলকতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঋগ্বেদ এর 'মধ্যমা' তথা 'কাব্যতীর্থ' পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তথা কাশীর ডী.এ.বী কলেজে সংস্কৃতাধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন। পণ্ডিত জীর সমগ্র সংস্কৃত তথা শাস্ত্রের স্বাধ্যায় অতিশয় বিস্তৃত তথা গম্ভীর ছিলো । বেদ,উপনিষদ্, দর্শন, নিরুক্ত আদি সমগ্র বৈদিক শাস্ত্রে সাথে তিনি সমগ্র পুরাণ এবং অনার্ষ গ্রন্থেরও অতিশয় বিস্তৃত পরিশীলন করেছিলেন । আর্যসমাজ বুলানালা, কাশী থেকে যখন এক পাক্ষিক পত্র 'সদ্ধর্ম-প্রচারক' প্রকাশ হতো তখন পণ্ডিত জী উক্ত পত্রিকার সম্পাদক পদে নিয়ুক্ত হন । এই পত্রের প্রকাশ কার্য স্থগিত হওয়ার তিনি 'পাখণ্ডখণ্ডিনী পতাকা' এর প্রকাশ কার্যের শুভারম্ভ করে । পণ্ডিত জী এই পত্রের মাধ্যমে কালুরাম, অখিলানন্দ আদি পৌরাণিকদের দ্বারা আর্যসমাজ তথা বৈদিক সিদ্ধান্তের উপর মিথ্যাচার সপ্রমাণ এবং বিস্তৃতভাবে খণ্ডন করেন । ধূপচণ্ডী বারাণসীতে পণ্ডিত জী কাশী গুরুকুল স্থাপনা করেন এবং এই গুরুকুলের মাধ্যমে তিনি কয়েক বর্ষ বিদ্যার্থীদের সর্ব শাস্ত্রের পাঠদান করেন । পণ্ডিত জী কালুরাম, অখিলানন্দ আদি প্রসিদ্ধ পৌরাণিকদের সাথে অনেক শাস্ত্রার্থও করেছেন এবং সকল শাস্ত্রার্থে মহত্ত্বপূর্ণ বিজয়লাভ করেছেন ।
বারাণসীতে ১৯৬৩ সনে এই মহান মহারথী দেহত্যাগ করেন ।
গ্রন্থরাজিঃ
1. সনাতন ধর্ম রহস্য (১৯২৬ সন)
2. অবতারবাদ মীমাংসা (কালুরাম শাস্ত্রী লিখিত অবতার মীমাংসা পুস্তকের খণ্ডন (১৯২৪ সন)
3. মূর্তিপূজা প্রশ্নোত্তরী (১৯৬৪ সন)
4. বিধবা বিবাহ-প্রশ্নোত্তরী (১৯২৭ সন
5. পৌরাণিক তীর্থ মীমাংসা
6.পুরাণ পর্যালোচন
7. গরুড়পুরাণোক্ত শ্রাদ্ধ বেদ বিরুদ্ধ
8. গণেশ মহাদেব কে পুত্র নহী
9. মূর্তিপূজা-বেদ বিরুদ্ধ (১৯৩৩ সন)
10. শুদ্ধি সনাতন (১৯৩০ সন)
11. শুদ্ধি-প্রশ্নোত্তরী
12. বৈদিক বর্ণ ব্যবস্থা (১৯৩৩ সন)
13. অছূতো কা মন্দির প্রবেশ সনাতন ধর্মানুকূল
14. ক্যা অহল্যা পাথর কী বনী থী ?
15. যজ্ঞোপবীত শঙ্কা সমাধান
16. ক্যা হনুমানজী বানর থে ?
17. বেদ ঔর পশু যজ্ঞ ( খ্রিষ্টান অধ্যাপক বিনোদবিহারী রায় দ্বারা লিখিত 'ঋষিয়ো কা খানপান' নামক পুস্তকের খণ্ডন (১৯১৮ সন)
18. বর্ণব্যবস্থা সমুচ্চয় (১৯৩৩ সন)
19. ঋষি দয়ানন্দ কা সত্য স্বরূপ (১৯৩০ সন)
মুন্শী ইন্দ্রমণির শিষ্য জগন্নাথদাস লিখিত স্বামী দয়ানন্দ কী নিন্দা-পরক পুস্তক– দয়ানন্দ কী বুদ্ধি, দয়ানন্দ কা হৃদয় তথা দয়ানন্দ কা কচ্চা চিট্ঠা পুস্তকের সপ্রমাণতার সহিত বিস্তৃত খণ্ডন
20. পূর্ণিয়া শাস্ত্রার্থ
21. মহাভারত কী রহস্যময় কথা
মহাভারতে বর্ণিত সর্পসত্র, তক্ষকের উপাখ্যান, যযাতি, শুক্রাচার্য তথা কর্ণের জন্ম আদি প্রসঙ্গের বিবেচন
22. বৈদিক ধর্ম শিক্ষা (১৯১৭ সন)
23. সরল সংস্কৃত প্রবেশিকা (২ ভাগ )
24. মহারাণা প্রতাপ
25. অজেয় তারা
26. বিশ্রাম বাগ আদি গ্রন্থ
-- বিদুষাং বশংবদঃ