পণ্ডিত ভগবানস্বরূপজী ন্যায়ভূষণ

 


পণ্ডিত ভগবানস্বরূপজী ন্যায়ভূষণ


আর্যজগতের‌ বয়োবৃদ্ধ বিদ্বান্‌‌, শাস্ত্রার্থ মহারথী পণ্ডিত ভগবানস্বরূপ জীর জন্ম ১৯৪৫ বিক্রমাব্দে উত্তর প্রদেশের বস্তী জেলার করমা নামক একটি গ্রামের কান্যকুব্জ ব্রাহ্মণ পরিবারে । 

তিনি কিছুকাল জ্বালাপুর এর গুরুকুল মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপন কার্যে নিযুক্ত ছিলেন । আর্য‌ প্রতিনিধি সভা‌, রাজস্থানের‌ প্রধান পদে‌ও ছিলেন । তৎপশ্চাৎ শাহপুরা নরেশ শ্রী নাহরসিংহ জী পণ্ডিত জীকে তাঁর রাজ্যে উচ্চপদে প্রতিষ্ঠিত করেন । সেই সময় বর্দ্ধমান শাস্ত্রী নামক এক জৈন পণ্ডিত শাহপুরা আসে । ৭ই মে ১৯২৯ সনে সে একটি জনসভায় ঈশ্বর বিষয়ে অনেক মিথ্যা‌ প্রলাপোক্তি দেয় । যদ্যপি সেই সময়েই আর্যসমাজের প্রসিদ্ধ বিদ্বান্ পণ্ডিত হরিশ্চন্দ্রজী শাস্ত্রী ঈশ্বরের‌ অস্তিত্বের হেতু বিষয়ে মহত্ত্বপূর্ণ মণ্ডনমূলক‌ ব্যাখ্যান দিয়ে উক্ত জৈন পণ্ডিতের প্রলাপোক্তিসমূহ‌ সপ্রমাণ খণ্ডন করেন, তথাপি পরের দিন অর্থাৎ ৮ই মে‌ সেই জৈন পণ্ডিত আর্যসমাজ মন্দিরে আসে এবং তার‌ মান্য‌ মতানুযায়ী শাস্ত্রার্থ করার‌ জন্য ইচ্ছা ব্যক্ত করে ।

 জৈন পণ্ডিত ১১২টি প্রশ্ন আর্যসমাজের সম্মুখে লিখিতরূপে প্রস্তুত করে‌, যা‌ অধিকাংশ 'স্বামী দয়ানন্দ ঔর জৈনসমাজ' নামক পুস্তক থেকে অক্ষরশ: উদ্ধৃত ছিলো‌ । পণ্ডিত ন্যায়ভূষণজী উক্ত প্রশ্নগুলোর লিখিত সমাধান করে দেন এবং সেই সাথে ১২১টি প্রশ্ন সমগ্র‌ জৈনমতের উপর লিখেন । প্রশ্নগুলোর‌ উত্তর দিতে সমগ্র‌ জৈন সমাজ কোণঠাসা হয়ে পড়ে । তথাপি কপট‌ জৈনগণ এই শাস্ত্রার্থের একাঙ্গী বিবরণ 'শাহপুরা শাস্ত্রার্থ' নামে পুস্তকাকার প্রকাশিত করে। এই পুস্তকের খণ্ডনে আর্যসমাজ শাহপুর এর তৎকালীন মন্ত্রী বিদ্যাভূষণ 'পণ্ডিত বিশ্বেশ্বর শর্মা' জী 'শাহপুরা শাস্ত্রার্থ প্রকাশ' নামক পুস্তক ১৯৮৭ বিক্রমাব্দে প্রকাশিত করেন । উক্ত‌ পুস্তকে আর্য‌ সমাজ দ্বারা লিখিত সমগ্র‌ জৈনমতকে ১২১টি প্রশ্ন তুলে ধরেন এবং কপট‌ জৈনদের একাঙ্গী বিবরণযুক্ত পুস্তকের খণ্ডন করে সার্বিক প্রত্যালোচনা করে প্রকাশিত করেন ।

১৯৩৩ সনে পণ্ডিত ভগবানস্বরূপ জী মহর্ষি দয়ানন্দ জীর অর্ধ-শতাব্দী নির্বাণে আজমের আসেন । শতাব্দী সমারোহ এর সমাপ্তির পশ্চাৎ বৈদিক যন্ত্রালয়, আজমের এর প্রবন্ধক পদে নিযুক্ত হন । এই পদ থেকে অবকাশ নিয়ে ১৯৬৫ সনে পণ্ডিত জী পরোপকারিণী সভার সদস্য হন এবং দেহান্ত অবধি পরোপকারিণী সভার পুস্তকাধ্যক্ষ পদে কার্যরত থাকেন । 

ন্যায়ভূষণজী কুশল লেখক তথা বৈদিক সিদ্ধান্তের মর্মজ্ঞ বিদ্বান্ ছিলেন । 'পরোপকারী' মাসিক পত্রিকার‌ প্রারম্ভ কাল (নভেম্বর ১৯৫৯ সন) থেকেই এই পত্রিকার সম্পাদনায় ছিলেন । মহত্ত্বপূর্ণ সম্পাদকীয় লেখ তথা পুস্তক সমীক্ষা আদির স্তম্ভ তিনি নিয়মিতরূপে লিখতেন‌ । 

 ১৯৭৩ সনের‌ ১২ই ডিসেম্বর‌ তাঁর দেহান্ত হয় ।


বিদুষাং বশংবদঃ 


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.