পণ্ডিত ভোজদত্ত শর্মা " আর্যমুসাফির "

 

পণ্ডিত ভোজদত্ত শর্মা " আর্যমুসাফির "


শাস্ত্রার্থ মহারথী নির্মাণের মহান নির্মাতা, সর্ব শাস্ত্র নিষ্ণাত, অপ্রতিম বক্তা, শাস্ত্রার্থ মহারথী,  ইসলাম তথা‌ খ্রিষ্টান মতবাদের উচ্চকোটির মর্মজ্ঞ বিদ্বান্ পণ্ডিত ভোজদত্ত শর্মার জীর জন্ম মুজাফফর জেলার থানা ভবন‌ নামক গ্রামে । 

পণ্ডিত লেখরাম জীর পরবর্তীতে আর্য জগতের অনেক বিদ্বানকে  " আর্যমুসাফির " নামে‌ সম্বোধন করা হয়ে থাকে । পরন্তু বাস্তবিকভাবে পণ্ডিত ভোজদত্ত‌ জী‌ই ছিলেন "আর্যমুসাফির‌ " । 

তিনি উর্দু এবং ফারসী ভাষা‌র শিক্ষা সম্পন্ন করেন বাল্যাবস্থাতেই । অধ্যয়ন সমাপ্তির পর তিনি পাঞ্জাবের মিণ্টগুমরী জেলায় সেচ বিভাগে উচ্চ‌ অধিকারী পদে‌ নিযুক্ত হন । সরকারী কর্মচারী হ‌ওয়ার পর‌ও তিনি আর্যসমাজের‌ সাপ্তাহিক সৎসঙ্গে নিয়মিতভাবে অংশগ্রহণ করতেন এবং উক্ত অনুষ্ঠানে পণ্ডিত জীর ইসলাম সম্পর্কে সামান্য রূপে ব্যাখ্যান আলোচনাপ্রধান হয়ে থাকতো‌ ।  

পণ্ডিত জীকে কয়েক মুসলিম সরকারি চাকুরীরত‌ অবস্থায় ধর্ম প্রচার করতে বাধা দেয় ‌এবং তাঁর উচ্চ পদের‌ অধিকারের ওপর ইংরেজ সরকারকে অভিযোগ দেয় ।  ফলতঃ পণ্ডিত ভোজদত্ত‌ জী পদত্যাগ‌ করেন এবং আর্য সমাজে সম্পূর্ণভাবে প্রবেশ করেন । 


তৎপশ্চাৎ তিনি তাঁর মুখ্য‌ কার্যক্ষেত্র আগরা নগরে স্থাপন করেন । পণ্ডিত লেখরাম জীর স্মৃতিতে "আর্য মুসাফির মিশন" এর স্থাপনা করেন, আর্য মুসাফির বিদ্যালয় নামে একটি উপদেশক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করে তথা 'আর্য মুসাফির' নামক‌ আর্য জগতের‌ বিখ্যাত‌ এবং প্রসিদ্ধ সাপ্তাহিক পত্রিকা‌র‌ও শুভারম্ভ করেন । 

 আর্য মুসাফির বিদ্যালয়ের প্রধান বিশেষত্ব  ছিল‌ আর্য সমাজের শ্রেষ্ঠত্ব এবং বৈদিক ধর্মের প্রচার‌ করা এবং উচ্চকোটির শাস্ত্রার্থী উপদেশক‌ গঠন‌ করা । 

 বিদ্যালয়ে বেদাদি শাস্ত্র‌ অতিরিক্ত আরবি, ফারসী, উর্দু ভাষা তথা‌ বিভিন্ন অবৈদিক মতবাদে তুলনাত্মক অধ্যয়ন করার‌ও ব্যবস্থা ছিলো । আর্য মুসাফির বিদ্যালয় থেকে পণ্ডিত মহেশপ্রসাদ জী মৌলবি আলিম ফজিল, পণ্ডিত কালীচরণ শর্মা মৌলবি, পণ্ডিত মুরারীলাল শর্মা, ঠাকুর অমরসিংহ আর্যমুসাফির, কুঁবর‌ সুখলাল‌ আর্য মুসাফির, পণ্ডিত রাম সহায় শর্মা,  পণ্ডিত বিহারীলাল শাস্ত্রী, পণ্ডিত রামচন্দ্র আর্য মুসাফির আদি‌ দিগ্‌বিজয়ী মহারাথী‌, উপদেশক‌ এবং বক্তা‌ গঠিত এবং প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন । 

পণ্ডিত ভোজদত্ত জী‌ শুদ্ধি ক্ষেত্রে অপূর্ব কার্য করেছেন । তিনি ভূতপূর্ব বীকান রাজ্যের‌ থানার প্রধান কর্মকর্তা আকবর‌ খা‌ শীরাজীকে শুদ্ধ করে তার নাম ঠাকুর‌ উত্তম সিংহ রাখেন । আরবি এবং ফারসীর‌ অন্য‌ একজন স্কলার মৌলানা‌ গুলাম হায়দার‌, আর্য মুসাফির পত্রিকা দ্বারা প্রকাশিত ইসলামের খণ্ডনাত্মক লেখ পড়ে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে পণ্ডিত ভোজদত্ত জীকে হত্যা‌ নিমিত্তে তাঁর সামনে আসেন এবং পণ্ডিত জীর সামনে অনেক শঙ্কা প্রস্তুত করেন। পণ্ডিত জী মৌলানার সব শঙ্কার সমাধান করে দেন । পণ্ডিত ভোজদত্ত জীর‌ দিব্য‌ মূর্তি দ্বারা মৌলানা‌ এতোই প্রভাবিত হয়েছিলো‌ যে‌ সেই মুহূর্তে‌ই শুদ্ধ হয়ে "পণ্ডিত সত্যদেব‌" নামে আর্য সমাজের উৎসাহী প্রচারক হয়ে যান‌ ।  পণ্ডিত সত্যদেব জী ইসলাম মতবাদের উপর খণ্ডনাত্মক অনেক প্রসিদ্ধ পুস্তক লিখেছেন । যথা‌ -- নারা‌এ হৈদরী, কুরান‌ মে‌ তহরীফ, অর্শ স‌ওয়ার-আল্লাহ, কুরান‌ সে‌ ইখতলাফাত, বেদো কী তাদাদ‌ কা উত্তর‌ আদি ।

পণ্ডিত ভোজদত্ত‌ জী সমগ্র ভারতবর্ষে প্রচার করেছেন । সর্বত্র তাঁর পদার্পণে মুসলিমরা প্রভাবিত হতো ।


শাস্ত্রার্থ মহারথী নির্মাণের মহান এই কারিগর ১৯১৬ সনে‌ আর্য সমাজ মন্দির, লোঅর‌ বাজার‌ শিমলায় দেহ ত্যাগ‌ করেন ।



গ্রন্থরাজিঃ


1.‌ ঈসাঈ মত কা জানাজা


2. মুবাহসা জবলপুর


3. মুবাহসা মক্খনপুর 


4. আদম কা লাদুম


5. নারা-এ হৈদরী


6. পয়ামে জিন্দগানী


7. ইস্মে আজম 


8. তস্‌বীহ মুহম্মদী


9.পঞ্চয়ে ফৌলাদ


10. ধর্মপাল কা ইন্দ্রজাল


11. মুবাহসা নাহন


12. অফসা-এ রাজ


13. রেলজে তনাসুখ


14. নিকাহ-নিয়োগ


15. আসমানী কিতাব


16. বাহাদুর


17.  ইসলাম কী অসলী তসবীর


18. মুস্তকবিল হমারে হাথ মেং হৈ


19. হৈয়াত ইসলাম


20. দীওয়ানে আর্য (উর্দু কাব্য সংগ্রহ)


বিদুষাং বশংবদঃ 


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.