পণ্ডিত শিবশঙ্কর শর্মা, কাব্যতীর্থ
মিথিলা প্রদেশ সবসময়ই সংস্কৃত বিদ্বানগণের জন্মভূমি হিসেবে খ্যাত । এই প্রদেশের দরভঙ্গা জেলার চিহুংটা গ্রামে এক সুপ্রতিষ্ঠিত মৈথিল ব্রাহ্মণ পরিবারে মহান বিদ্বান, উচ্চকোটির গবেষক, সহস্র প্রমাণের কণ্ঠস্থ, দিগ্গজ শাস্ত্রার্থ মহারথী পণ্ডিত শিবশঙ্কর জীর জন্ম হয় ।
পণ্ডিত জীর পঠন-পাঠন সম্পন্ন হয় প্রাচীন পরম্পরা অনুসারে । তাঁর গুরু ছিলেন পণ্ডিত অম্বিকাদত্ত ব্যাস, যিনি সংস্কৃতের প্রসিদ্ধ বিদ্বান শিবরাজ বিজয়ের মতো প্রৌঢ় সংস্কৃত উৎকৃষ্ট গদ্য গ্রন্থের লেখক ছিলেন ; অম্বিকাদত্ত জী তাঁর সময়কালে প্রসিদ্ধ পৌরাণিক উপদেশক তথা ব্যাখ্যাতা ছিলেন । এ ছাড়াও তাঁর গুরুদের মধ্যে পণ্ডিত রাম স্বামী শাস্ত্রী তথা পণ্ডিত গঙ্গাধর শাস্ত্রী জীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ।
পৌরাণিক গুরুর শিষ্য হওয়া সত্ত্বেও পণ্ডিত শিবশঙ্কর জীর মনে আর্য সমাজের প্রতি শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাস বাড়তে থাকে এবং আর্য সমাজের প্রতি প্রভাবিত হতে থাকে । যার ফলস্বরূপ তিনি মহর্ষি দয়ানন্দ জীর রচিত সমগ্র সাহিত্যের বিশেষ তথা বিশদ অধ্যয়ন করেন । প্রারম্ভিক পর্যায়ে পণ্ডিত জী যখন মহর্ষি দয়ানন্দ জীর গ্রন্থসমূহ অধ্যয়ন করলেন তখন তিনি সর্বোতভাবে অনুভব করলেন বেদের জ্ঞান বিনা তাঁর সম্পূর্ণ বিদ্যা এবং যোগ্যতা নিষ্ফল । তৎপশ্চাৎ তিনি বেদ সহ সমগ্র বৈদিক শাস্ত্রের বিশেষ অধ্যয়ন করেন এবং নিজেকে বৈদিক ধর্মের প্রচারে সমর্পিত করেন ।
মিথিলার মতো পুরাণপন্থী পৌরাণিকদের রাজত্বে পণ্ডিত শিবশঙ্কর জীর বিরোধী থাকা স্বাভাবিক বিষয় ছিলো । যখন শ্রী পণ্ডিত জী একজন কট্টর আর্যসমাজী, আর্যোপদেশক এবং মহর্ষি দয়ানন্দ জীর পরিপূর্ণ অনুগামী হন তথা বেদপ্রচারকরূপে উদীয়মান হন ; তখন পৌরাণিকদের মৈথিল মণ্ডলে শোরগোল পড়ে যায় ।
পৌরাণিকদের অসহিষ্ণু এবং সঙ্কীর্ণ মনোবৃত্তির কারণে সেই অঞ্চলের প্রায়ঃ সকলেই পণ্ডিত জীর ঘোর হয়ে যায় এবং বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে । অতঃপর বিহারে তিনি তাঁর কার্যক্ষেত্র প্রতিষ্ঠা করেন । কালান্তরে তিনি আর্যসমাজের উপদেশক পদে অধিষ্ঠিত হন ।
সন ১৮৯৮ থেকে ১৯০০ সন পর্যন্ত রাচীতে অবস্থান করে সেখানের সুপ্রসিদ্ধ আর্য নেতা বাবু বালকৃষ্ণ সহায় জী, যিনি বাংলা-বিহার আর্য প্রতিনিধি সভার প্রথম প্রধান ছিলেন, তাঁর সহিত বৈদিক ধর্মের প্রচারে রত হন । রাচীতে অবস্থান করে পণ্ডিত জী " আর্যাবর্ত " পত্রিকায় আর্য সমাজের অনেক সৈদ্ধান্তিক লেখ লিখেন প্রকাশে রত থাকেন ।
বিহার ত্যাগ করে ১৯০৩ সনে পণ্ডিত জী আজমের আসেন তথা মহর্ষি দয়ানন্দ জীর স্থাপিত পরোপকারিণী সভার তত্বাবধান কার্যে নিযুক্ত হন । এখানে তিনি সন ১৯০৩ থেকে ১৯০৬ সন পর্যন্ত কার্যরত থাকেন ।
রাজস্থানকে কেন্দ্র করে পণ্ডিত শিবশঙ্কর জী মধ্যভারত তথা গুজরাটে মহত্ত্বপূর্ণ প্রচার কার্য করেন । এই সময়ে তিনি ছান্দোগ্য এবং বৃহ্যদারণ্যক উপনিষদের সংস্কৃত তথা হিন্দি ভাষায় প্রসিদ্ধ এবং বিখ্যাত ভাষ্য প্রণয়ন করেন । পরোপকারিণী সভা থেকে উক্ত উপনিষদ-দ্বয়ের ভাষ্য প্রথম প্রকাশিত হয় ।
১৯০৬ সনের আগষ্ট মাসে পণ্ডিত শিবশঙ্কর জী পাঞ্জাবে গমন করেন এবং পাঞ্জাব আর্য প্রতিনিধি সভার উপদেশক পদে কার্যরত থাকেন ।
এ সভায় কার্যরত অবস্থায় তিনি "বেদতত্ত্ব প্রকাশ " শীর্ষক গ্রন্থমালার লেখনকার্যের শুভারম্ভ করেন । এই গ্রন্থমালার অন্তর্গত ওঙ্কার নির্ণয়, জাতি নির্ণয়, শ্রাদ্ধ নির্ণয়, ত্রিদেব নির্ণয় তথা বৈদিক ইতিহাসার্থ নির্ণয় গ্রন্থ সহ অনেক প্রসিদ্ধ এবং বিখ্যাত গ্রন্থ ।
তাঁর সাহিত্যের প্রভাব কেবল উত্তর ভারত পর্যন্তই সীমিত ছিলো না ; দক্ষিণ ভারতে সাগর তটে অবস্থিত কেরল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নরেন্দ্র ভূষণ জী একটি মালায়ম পুস্তক বী. এ. শ্রেণীতে পাঠ্যপুস্তকরূপে পাঠদান করান । এই পুস্তকের মূলাধার শ্রী পণ্ডিত জীর রচিত 'ত্রিদেব নির্ণয়' পুস্তক । যা স্বয়ং নরেন্দ্র ভূষণ জী বলেছেন ।
পণ্ডিত জীর পাণ্ডিত্যপূর্ণ লেখ তৎকালীন হিন্দির প্রায়ঃ সমস্ত নামকরা পত্রিকায় প্রকাশিত হতো, আর্যসমাজের সব উর্দু পত্রিকাও কখনও কখনও তাঁর লেখ অনূদিত করে প্রকাশিত করতেন ।
পণ্ডিত জীর কার্যক্ষেত্র সমগ্র উত্তর ভারতে বিদ্যমান ছিলো ।
মহর্ষি দয়ানন্দ জী ঋগ্বেদ ভাষ্য যে মণ্ডল পর্যন্ত করেছিলেন, তার পরবর্তী মণ্ডল গুলোর ভাষ্যও করেছেন পণ্ডিত জী । ভাষ্য-কার্যের শুভারম্ভ করেন ১৯৮৭ বিক্রমাব্দে ।
পণ্ডিত শিবশঙ্কর জী গ্রন্থ রচনার সাথে শাস্ত্রার্থেও প্রসিদ্ধ এবং প্রকাণ্ড দক্ষ ছিলেন । অনেক বছর শাস্ত্রার্থ প্রধান ছিলেন ।
পণ্ডিত জী তাঁর একটি শাস্ত্রার্থের উল্লেখ তাঁর রচিত বৈদিক ইতিহাসার্থ নির্ণয় গ্রন্থের ভূমিকায় বর্ণনা করেছেন ।এই শাস্ত্রার্থে একজন ধুর্ত পৌরাণিক যজুর্বেদ এর ৩০/১৫ নং মন্ত্রে উল্লেখিত
" আখুবাহন গজাননায় " এই অংশটুকু নিজের মনমতো ব্যাখ্যা করে বেদ দ্বারা ইঁদুর বাহন পৌরাণিক গণেশকে সিদ্ধি করতে চেয়েছিলো, পরন্ত পণ্ডিত শিবশঙ্কর জীর সমক্ষে সেই ধুর্ত পৌরাণিক চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায় ।
১৯১০ সনে মহাত্মা স্বামী শ্রদ্ধানন্দ জীর নিমন্ত্রণে পণ্ডিত শিবশঙ্কর জী গুরুকুল কাঁগড়ীতে সর্বপ্রথম " বেদোপাধ্যায় " নিযুক্ত হন ।
পণ্ডিত জীর প্রবল ইচ্ছা ছিলো, অন্য দর্শনের ন্যায় 'আর্য-দর্শন' নামে একটি সাহিত্যের প্রণয়ন । যদি ছয় মাসও একান্ত শান্তিতে সময় পেতেন তাহলে তিনি 'আর্য-দর্শন' গ্রন্থ প্রণয়নের জন্য সম্পূর্ণভাবে মনোনিবেশ করতে পারতেন ।
এই 'আর্য-দর্শন' গ্রন্থে আস্তিক, নাস্তিক, পৌরস্ত্য এবং পাশ্চাত্য সহ সংসারের সমগ্র দর্শনের বিস্তৃত সমীক্ষা তথা বিশদ বর্ণনা করে বেদ প্রতিপাদিত পরম সত্য সিদ্ধান্তের অকাট্য স্বরূপ উপস্থাপন করার উদ্দেশ্য ছিলো পণ্ডিত জীর ।
আফসোস ! পণ্ডিত জী এমন মহত্ত্বপূর্ণ সাহিত্য প্রণয়ণের অবকাশ পান নাই ।
পণ্ডিত জী অত্যন্ত উচ্চ কোটির আস্তিক ছিলেন । জীবনের অন্তিম ক্ষণে তিনি এক ভয়ঙ্কর রোগে আক্রান্ত হন ।
আর্যপ্রতিনিধি সভা পাঞ্জাব থেকে তাঁর সুস্থতার ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়া হয় । তাঁর রোগাক্রান্ত শরীর দেখে বিভিন্ন আর্যজন যখন বলেন - "পণ্ডিত জী ! ঈশ্বর আপনাকে এই ভয়ঙ্কর যাতনা দিয়েছেন ।"
অত্যন্ত মেঘ-গম্ভীর স্বরে কবিরত্ন প্রকাশ জীর সমান পণ্ডিত জী সবাইকে প্রত্যুত্তর দেন – " ঈশ্বরের দয়া এবং ন্যায় পর্যায় । ঈশ্বর ন্যায় করেন, এই-ই তার দয়া । সেই প্রভু এই কারণে দয়ালু যে, তিনি অন্যায় করেন না । আমার রোগ, আমার দুঃখ আমারই কর্মের ফল । ভালো এই যে, আমি ভুগছি " ।
আর্য জগতের প্রকাণ্ড বিদ্বানগণের দৃষ্টিতে পণ্ডিত শিবশঙ্কর জী ——
পূজ্যপাদ বেদবিদ্ স্বামী বেদানন্দ জী তীর্থ বলেছেন,
“ঋষি দয়ানন্দ জীর বেদবিষয়ক দৃষ্টিকোণ সম্বন্ধে যতটা পণ্ডিত গুরুদত্ত জী বিদ্যার্থী এবং পণ্ডিত শিবশঙ্কর জী কাব্যতীর্থ বোধগম্য হয়েছেন, ততোটা আর কেউ নন ।"
আর্যসমাজের যশস্বী মনীষী শ্রী পণ্ডিত চমূপতি জী ( যিনি আর্য দ্বিতীয় গুরুদত্ত বিদ্যার্থী) বলেছেন,
"পণ্ডিত শিবশঙ্কর জীর কীর্তিসমূহ আর্য-সাহিত্যের এক পাণ্ডিত্যপূর্ণ অঙ্গ ।"
প্রসিদ্ধ মনীষী, যিনি আর্য সমাজের 'ভীষ্ম' নামে খ্যাত, প্রাধ্যাপক রাজেন্দ্র জিজ্ঞাসু জী বলেছেন,
"আর্য সমাজে শঙ্কর নামে দুইজন বিদ্বান খ্যাত এবং তাঁদের অত্যন্ত পূজ্য দৃষ্টিতে শ্রদ্ধা করা হয় । এই দুইজনের জন্য আর্য সমাজের যশ দশ দিশায় ছড়ানো । এই দুই শঙ্কর হলেন, পণ্ডিত শিবশঙ্কর শর্মা জী কাব্যতীর্থ এবং পণ্ডিত নাথুরাম জী শঙ্কর শর্মা । "
গ্রন্থরাজিঃ
1. ঋগ্বেদ ভাষ্য (১৯৩০ সন) – ৭ম মণ্ডলের ৬১তম সূক্তের ৩য় মন্ত্র থেকে ৮ম মণ্ডলের ২৯তম সূক্ত পর্যন্ত । কলকাতা নিবাসী সেঠ ছাজুরাম জী প্রকাশিত করেন ।
2. ওঙ্কার নির্ণয় (১৯০৬ সন) – এই গ্রন্থে বেদ, উপনিষদ্, ব্রাহ্মণ আদি শাস্ত্রের আধারে ওঙ্কারের মহিমার বিস্তৃত বর্ণনা করা হয়েছে । আর্য প্রতিনিধি সভা পাঞ্জাব থেকে প্রকাশিত হয় ।
3. জাতি নির্ণয় (১৯০৭ সন) –
গুণ-কর্মানুসারে বর্ণ-ব্যবস্থার বিস্তৃত বর্ণনা
4. ত্রিদেব নির্ণয় (১৯১৩ সন) – পণ্ডিত জীর প্রধান মহত্ত্বপূর্ণ রচনার মধ্যে এই গ্রন্থ বিশেষ স্থানে অবস্থান করবে । গ্রন্থে ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিব এই দেবত্রয়ীর বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে ।
5. বৈদিক ইতিহাসার্থ নির্ণয় –
পুস্তকের প্রথম ভাগ ১৯০৯ সনে আর্য প্রতিনিধি সভা পাঞ্জাব থেকে প্রকাশিত হয় । বেদ মন্ত্রে উল্লেখিত বিবিধ নামের সমস্ত প্রকার লৌকিক ইতিহাস পরক অর্থ, তথাকথিত পৌরাণিক উপাখ্যান সপ্রমাণ খণ্ডন করে বেদোক্ত যৌগিক দৃষ্টিতে বেদে সর্বপ্রকারের লৌকিক ইতিহাস দর্শানোর অপচেষ্টা খণ্ডন করা হয়েছে এবং বিশদভাবে বৈদিক অর্থ দর্শানো হয়েছে ।
6. শ্রাদ্ধ নির্ণয় (১৯০৮সন) –
পৌরাণিক মৃতক শ্রাদ্ধের বিস্তৃত খণ্ডন-পরক গ্রন্থ ।
আর্য প্রতিনিধি সভা থেকে সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় ।
7. ছান্দোগ্যোপনিষদ্ এর সংস্কৃত-হিন্দি ভাষ্য (১৯০৫সন)
8. বৃহদারণ্যকোপনিষদ্ এর সংস্কৃত-হিন্দি ভাষ্য (১৯১১সন)
9. বৈদিক রহস্য ভাগ – ১ম ভাগ প্রকাশিত চতুদর্শ ভুবন শীর্ষক থেকে ১৯১২ সনে প্রকাশিত । ২য় ভাগ বসিষ্ঠনন্দিনী শীর্ষক থেকে ১৯৬৮ বিক্রমাব্দে প্রকাশিত । ৩য় ভাগ বৈদিক বিজ্ঞান শীর্ষক থেকে ১৯১২ সনে প্রকাশিত । ৪র্থ ভাগ বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত শীর্ষক থেকে ১৯১১ সনে প্রকাশিত ।
10. গোস্বামী তুলসীদাস কী এক অলৌকিক মালা (১৯১০সন)
11. বেদসুধা
12. বৈদিক পীযুষ বিন্দু (১৯২৭সন) – কিছু উদাত্ত ভাবনা-প্রধান মন্ত্রসমূহের ব্যাখ্যা । সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় আর্য প্রতিনিধি সভা পাঞ্জাব এবং লাহোর থেকে ।
তৎপশ্চাৎ গ্রন্থটি সত্যপ্রকাশন মথুরা থেকে প্রকাশিত হয় ।
13. শ্রী কৃষ্ণমীমাংসা (১৯৬৭ বিক্রমাব্দ)
14. বেদই ঈশ্বরীয় জ্ঞান (১৯৩৪ সন)
অনেক বছর পর আর্যসমাজ বুলাতালা, বেনারস থেকে শ্রী বলদেব আর্য পুনঃ প্রকাশিত করেন ।
15. ত্রৈতসিদ্ধান্তাদর্শ – পণ্ডিত জীর রচিত অত্যন্ত মহত্ত্বপূর্ণ তথা পাণ্ডিত্যপূর্ণ গ্রন্থ ।
আর্য প্রতিনিধি সভা লাহোর পদবাক্য-প্রমাণজ্ঞ মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত ব্রহ্মদত্ত জী জিজ্ঞাসু জীর নিকট ১৯৪৬ সনে গ্রন্থটি প্রকাশনের দায়িত্ব দেন ।
16. ঈশ্বরীয় পুস্তক কৌন
17. প্রশ্ন – এ গ্রন্থে রামায়ণের অতি ভক্তদের জন্য গূঢ়-গূঢ় প্রশ্ন বিদ্যমান ।
18. অলৌকিক-মালা (১৯১৬ সনে দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত )