আচার্য স্বামী অভয়দেব
( পণ্ডিত দেব শর্মা 'অভয়' বিদ্যালঙ্কার )
বৈদিক বাঙময়ের প্রকাণ্ড বিদ্বান্ তথা লেখক পণ্ডিত দেব শর্মা 'অভয়' জীর জন্ম ১৮৯৬ সনের ২রা জুলাই মুজফ্ফরনগরের চরথাবল গ্রামে পণ্ডিত রামপ্রসাদ জীর গৃহে ।
সাত বর্ষ আয়ুতে তিনি গুরুকূল কাঁগড়ীতে প্রবিষ্ট হন। ১৯১৯ সনে তিনি "বিদ্যালঙ্কার" উপাধি প্রাপ্ত হন । গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন থেকে প্রেরণা পেয়ে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে ব্রতী হন তথা খাদী প্রচার, মদ নিষেধ, বিদেশী বস্ত্রের বহিষ্করণ আদি কার্যক্রমে তিনি যোগদান করেন ।
১৯৩০ সনে সত্যাগ্রহ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের দরুন তাঁর কারাবাস হয় ।
স্বামী শ্রদ্ধানন্দজীর ইচ্ছায় তিনি গুরুকূল কাঁগড়ীতে বেদের উপাধ্যায় পদে অধিষ্ঠিত হন । ৬ মাস পশ্চাৎ গুরুকূলের উপাচার্য হন ।
আচার্য রামদেবজী দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রচার কার্যে গমনের পর পণ্ডিত জী আচার্য পদেও কার্যরত ছিলেন ।
এক বর্ষ পশ্চাৎ আচার্য রামদেব জী স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর তিনি উত্তরাখণ্ডে অজ্ঞাতবাস তথা সাধনা হেতু গমন করেন । অজ্ঞাতবাস থেকে ফিরে এসে তিনি সমগ্র দেশ ভ্রমণ করেন । গান্ধীর সাবরমতী আশ্রমে তিনি কিছুকাল ছিলেন ।
আশ্রমে অবস্থান করে গান্ধীকে গুজরাটি ভাষার বদলে হিন্দিতে দৈনিক প্রার্থনা সম্পন্ন করার প্রেরণা দেন ।
দেশাটনের পশ্চাৎ তিনি পুনঃ গুরুকূল ফিরে আসেন তথা আচার্য পদে দায়িত্বরত থাকেন ।
কালান্তরে তিনি যোগী অরবিন্দ জীর সাধনা পদ্ধতি দ্বারা প্রভাবিত হন তথা বছরের চারটি মাস অরবিন্দ আশ্রম, পাণ্ডিচেরীতে অবস্থান করে যোগ সাধনা করতে থাকেন । পণ্ডিত জী ১৯৩৮ সনের ৩রা এপ্রিল গঙ্গাপারের পুরানো গুরুকূলে গমন করে স্বামী সত্যানন্দ জীর কাছ থেকে সন্ন্যাস দীক্ষা গ্রহণ করেন । সন্ন্যাস গ্রহণের পর তিনি স্বামী অভয়দেব নামে বিখ্যাত হন । ১৯৪২ সনে তিনি গুরুকূলের সাথে সমস্ত সম্বন্ধ সমাপ্ত করেন তথা স্বীয় গ্রাম, চরথাবলে ' অরবিন্দ নিকেতন ' স্থাপনা করেন ।
সেখানে অবস্থান করে তিনি বেদ তথা যোগের প্রচারে রত হন ।
১৯৭০ সনের ৯ই জানুয়ারি তিনি দেহত্যাগ করেন ।
লেখন কার্য —
1. বৈদিক বিনয় ( ৩টি ভাগ ) – গুরুকূল কাঁগড়ীর স্বাধ্যায় মঞ্জরী শীর্ষক গ্রন্থমালা পুষ্প ৩, ৪, ৫ এর অন্তর্গত ক্রমশ: ১৯৮৮,১৯৮৯ তথা ১৯৯০ বিক্রমাব্দে প্রকাশিত । ৩৬৫ দিনের প্রতিদিন একটি করে মন্ত্র পড়ার জন্য সুন্দর ব্যাখ্যাসমৃদ্ধ পুস্তক ।
উক্ত গ্রন্থ বেদাঞ্জলি শীর্ষক থেকে দয়ানন্দ সংস্থান,দিল্লি ২০৩৩ বিক্রমাব্দে প্রকাশিত করে ।
2. ব্রাহ্মণ কো গৌ – অথর্ববেদের ব্রহ্মগবী সূক্তের ব্যাখ্যা । ( ১৯৮৬ বিক্রমাব্দ )
3. বৈদিক ব্রহ্মচর্যগীত – অথর্ববেদের ব্রহ্মচর্যসূক্তের ব্যাখ্যা । (২০০১ বিক্রমাব্দ)
4. বৈদিক উপদেশমালা
5. তরঙ্গিত হৃদয় – গদ্য কাব্য ।
পণ্ডিত জীর শ্রী অরবিন্দ লিখিত মহর্ষি দয়ানন্দ বিষয়ক, মূলতঃ বৈদিক ম্যাগাজিনের ( গুরুকূল কাঁগড়ীর মাসিক মুখ পত্রিকা) জন্য ১৯১৬ সনে লিখিত হয়েছে ।
শ্রী অরবিন্দ জীর বেদ বিষয়ক গ্রন্থ 'বেদ রহস্য' গ্রন্থের হিন্দি অনুবাদও আচার্য অভয়দেব জী করেছেন ।